




কার্টুন বাচ্চাদের মনোরঞ্জনের একটা মাধ্যম। তা সে টিভিতে আসুক বা বইয়ের পাতায়। কিন্তু আজ সময় বদলেছে এখন আর বাচ্চারা টিভিতে কার্টুন দেখে বা কমিক বুক পড়ে মজা পায় না বরং তারা স্মার্টফোন ও সোশ্যাল মিডিয়াতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন ডিডি ন্যাশনাল ও কমিক বুক ই ছিল বাচ্চাদের মনোরঞ্জনের প্রধান মাধ্যম। মাথায় পাগড়ী বাঁধা ও লম্বা গোঁফ এর “চাচা চৌধুরী” কমিকটি নব্বইয়ের দশকে বাচ্চাদের মন জিতে নিয়েছিল।





এই চরিত্রটি সৃষ্টি করেছিলেন কার্টুনিস্ট প্রাণ কুমার শর্মা। চাচা চৌধুরীর পাশাপাশি পিংকি, বিল্লু, রমন, চন্নি চাচীর মত চরিত্র সৃষ্টিতেও তার অবদান রয়েছে। প্রাণ কুমার শর্মা 15 ই আগস্ট 1938 সালে লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর দেশ স্বাধীন হলে তারা মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়ার শহরে বসতি শুরু করেন। গোয়ালিয়ার এ আসার পর তিনি স্কুলে ভর্তি হন এবং স্কুল পাশ করার পর মুম্বাই চলে যান ফাইন আর্টে ডিগ্রী নেওয়ার জন্য।





ফাইন আর্টে ডিগ্রী নেওয়ার পর প্রাণ কুমার শর্মা দিল্লি চলে যান এবং সেখানে “দৈনিক মিলাপ” নামের একটি খবরের কাগজে কার্টুনিস্টের পদে চাকরি পান। এই সময় তিনি “মমেং ডব্বু” নামের একটি কমিক বানান যা বাচ্চাদের অনেক ভালো লাগে। এরপর “লটপট” নামক একটি হিন্দি পত্রিকায় চাচা চৌধুরী কমিকটি বানান যা তার কেরিয়ারের সবথেকে সফল কমিক হয়ে ওঠে।





এরপর তিনি এই চরিত্রটিকে জীবিত রাখার কথা ভাবেন। যেই সময় চাচা চৌধুরী বাজারে লঞ্চ হয় সেই সময় ইংরেজি কমিকের চল ছিল। প্রাণ কুমার শর্মা চাচা চৌধুরী চরিত্রটিকে ব্যাটম্যান ও সুপারম্যান এর থেকে আলাদা রাখতে চেয়েছিলেন। তাই তিনি একটি সাধারণ মানুষকে কল্পনা করেন। যার অনেক বড় গোঁফ আছে আর যার উচ্চতা ছোট, যে কিনা মাথায় চুল না থাকার জন্য পাগড়ি পরে।





এই সাধারণ মানুষের চরিত্রটির মধ্যের অসাধারনত্ব বাচ্চাদের মনে খুব সহজেই জায়গা করে নেয়। 1995 সালে “লিমকা বুক রেকর্ড” প্রাণ কুমার শর্মার নাম “পিপল অফ দ্যা ইয়ার” এ শামিল করে। 2001 সালে প্রাণ কুমার শর্মা কে “ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কার্টুনিস্ট” থেকে “লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড” এ সম্মানিত করা হয়। 2014 সালে হার্ট অ্যাটাকের কারণে প্রাণ কুমার শর্মা ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে চলে যান।।




