




যদি মানুষের মধ্যে কোন কিছু করার দৃঢ় সংকল্প থাকে তবে কোনো কাজই তার কাছে কঠিন হয় না। আইএএস অফিসার জুনায়েদ আহমেদের অসফলতাকেই সফলতা বানাতে সক্ষম হয়েছিলেন। জুনায়েদ আহমেদ ইউপিএসসি এবং সিভিল সার্ভিস এর মত পরীক্ষা পাস করে মানুষের মনের চিন্তা ধারাকে বদলাতে পেরেছেন। অনেকেই মনে করেন ইউপিএসসির মত বড় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে গেলে ছোটো থেকেই ইন্টেলিজেন্ট হতে হয়। কিন্তু এই ধরনের স্টেরিওটাইপ চিন্তাভাবনাকে জুনায়েদ আহমেদ ভেঙে দিয়েছেন।





তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন মধ্যমেধার ছাত্র-ছাত্রীরাও এই ধরনের বড় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে। উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা জুনায়েদ আহমেদ এর বাবা জেলা আদালতে ওকালতি করেন এবং মা গৃহিনী। জুনায়েদ আহমেদ এর পড়াশোনা শুরু হয় তাদের পৈত্রিক গ্রামের স্কুল থেকে, এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য জুনায়েদ এলাহাবাদ মুসলিম ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হন। জুনায়েদ আহমেদ তার এক ইন্টারভিউতে জানিয়েছিলেন যে তিনি কোনদিনই খুব একটা পড়াশোনায় ভালো ছিলেন না, তিনি কখনোই 60 শতাংশের বেশি মার্কস পেয়ে পাশ করেননি।





তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য জামিয়া মিলিয়া ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। এখান থেকেই তার ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায় এবং এই নিয়ে সিরিয়াস হন। যদিও অনেকেই তাকে ইউপিএসসি পরীক্ষা দিতে মানা করেন। তাদের মত 60% নাম্বার পেয়ে পাস করা এক ছাত্রের পক্ষে ইউপিএসসির মত বড় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সম্ভব নয়। জুনায়েদ এর পরিবারের কেউই প্রশাসনিক স্তরে কর্মরত না থাকার কারণে ইউপিএস এর মত পরীক্ষা নিয়ে তার কোন আইডিয়া ছিলো না।





তাই তিনি ঠিক করেন যে ইন্টারনেট থেকে এই বিষয়ে জানবেন। ইন্টারনেট থেকে তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষার তথ্য জোগাড় করে 2013 সাল থেকে শুরু করেন পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া। এই সময়ে তার পরিবার তাকে ভীষণ ভাবে সাপোর্ট করেছিলেন। প্রথমদিকে জুনায়েদ 9 থেকে 10 ঘন্টা পড়া করতেন এরপর বেসিক ক্লিয়ার হয়ে গেলে তিনি সেই সময় কমিয়ে চার ঘণ্টা করে দেন। জুনায়েদ জানান মন দিয়ে পড়া করলে অল্প সময়েও “ইউপিএসসি”র পড়া তৈরি করা সম্ভব।





5 বারের চেষ্টায় 2019 সালে জুনায়েদ ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। 2019 সালে যখন ইউপিএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোয় তখন জানা যায়, না শুধু তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন, তিনি তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন এই পরীক্ষায়। জুনায়েদের এই সফলতায় তার বাবা-মা ভীষণ খুশি হন। জুনায়েদ তাদের জন্য এক দৃষ্টান্ত যারা মনে করেন শুধুমাত্র ইন্টেলিজেন্ট স্টুডেন্টরাই ইউপিএস এর মত বড় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে।





অনেক সময় শোনা যায় যে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে অনেক পরীক্ষার্থীরা ডিসটেন্স মেনটেন করায় তাদের সফলতা এসেছে। কিন্তু জুনায়েদ বলেন সোশ্যাল মিডিয়া ও ইন্টারনেট এর সঠিক ব্যবহার জানলে এইসব মাইন্ড ডাইভার্ট করার বদলে অনেক ধরনের সাহায্য করতে পারে। এখন তো সোশ্যাল মিডিয়া ও ইন্টারনেটে এই ধরনের পরীক্ষার অনেক সাজেশন পাওয়া যায়। আজ জুনায়েদ ইউ পি এস সির প্রস্তুতি নেওয়া অনেক পরীক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা।।




