




কথায় আছে জীবন না তো অতীতে আছে আর না ভবিষ্যতে। জীবন শুধু বর্তমানে। আপনার অতীতে আপনার সাথে যা হয়েছিল তা শুধু আপনি জানেন। আর ভবিষ্যতে কী হবে তা ভেবে বর্তমান খারাপ করা উচিত নয়। আজ আপনাদের এমন এক জনের কথা বলব যাঁর অতীত ধোঁয়াচ্ছন্ন ছিল, কিন্তু তিনি বর্তমানে এমন কাজ করেছেন যার জন্য তাঁর জন্য অনেকেরই গর্ব হয়।





আমরা কথা বলব আজ শ্বেতা কে নিয়ে। যাঁর জন্ম এমন এক জায়গায় হয় যাকে নরক বললেও কম বলা হবে। কিন্তু শ্বেতা সেই নরক থেকে বেরিয়ে ২৮ লাখের স্কলারশিপের সাহায্যে আমেরিকার কলেজে পড়াশোনা করেন। শ্বেতার জন্ম মুম্বাই -এর রে-ড-লা-ই-ট এরিয়া কামাঠীপুরা তে হয়। কামাঠীপুরা এশিয়ার নামকরা রে-ড-লা-ই-ট এরিয়ার মধ্যে অন্যতম।





শ্বেতার যেখানে জন্ম সেই জায়গা তাঁকে স্বপ্ন দেখার, পড়াশোনা করার স্বাধীনতা দেয় না। কিন্তু শ্বেতা স্বপ্ন দেখার সাহস করেছিলেন। কিন্তু মাত্র নয় বছরে শ্বেতাকে তিন বার শ্লীলতাহানির শিকার হতে হয়েছিল। এমনকি তাঁর রূপের জন্যও অনেকে তাঁকে নিয়ে মজা করত। যদিও অন্যান্য সে-ক্স ওয়ার্কাররা তাঁকে পড়াশোনা করার প্রতি প্রেরণা দিতেন।





কিন্তু তাঁর জীবনে এত কিছু হওয়ার ফলে তাঁর আত্মবিশ্বাস কমে যায়। ১৬ বছর বয়সে শ্বেতা ক্রান্তি নামক এক এনজিও জয়েন করেন। এরপর তাঁর জীবনে পরিবর্তনের শুভ সূচনা হয়। এই এনজিও তাঁকে আবার নিজেকে ভালোবাসতে শেখায়। এত কিছু খারাপ হওয়ার পর ২০১৩ সালে তাঁর জীবনে পরিবর্তন আসা শুরু হয়।





এই বছর আমেরিকার এক ম্যাগাজিন তাঁদের এপ্রিল মাসের কলামে সেইসব মহিলাদের নামের তালিকা লিপিবদ্ধ করেন যাঁরা ২৫ বছরের কম বয়সে সমাজের জন্য প্রেরণা হয়েছেন। এরপর তিনি আমেরিকার এক কলেজে পড়াশোনা করার জন্য ২৮ লাখ টাকার স্কলারশিপ পান। শ্বেতা প্রথম থেকেই আমেরিকার কলেজে পড়তে চেয়েছিলেন, তাই তিনি ঐসব কলেজ নিয়ে রিসার্চ করতে শুরু করেন।





এই সময়ে স্কলারশিপ প্রাপ্ত সেই কলেজের এক প্রাক্তন ছাত্রের সাথে তাঁর যোগাযোগ হয়। সেই প্রাক্তন ছাত্রের শ্বেতার ব্যক্তিত্ব এত ভালো লাগে যে সে তাঁর কলেজে শ্বেতার সম্বন্ধে কথা বলে। আর শ্বেতার করা বিভিন্ন সোশ্যাল ওয়ার্কের কারণে তাঁর স্কলারশিপ পাওয়া সহজ হয়ে যায়। এই কাহিনি থেকে আরও একবার প্রমাণিত হয়ে যায় যে অতীত অন্ধকারাচ্ছন্ন হলেও মানুষ নিজের কর্মের মাধ্যমে তাঁকে আলোয় ভরে দিতে পারে।।




