




ভালোবাসার জন্য মানুষ যে কী কী করতে পারে তার কোনো শেষ নেই। এমন ভালোবাসার বহু দৃষ্টান্ত সম্বন্ধে বই তে পড়েছি, আবার অনেক সময় চোখেও দেখেছি। কিন্তু কেরলের পালাক্কার -এ থাকা এই জুটির প্রেম-কাহিনি কোনো সিনেমার গল্প থেকে কম না। এই প্রেম কাহিনির শুরু হয় যখন ১০ বছর আগে আইলুর গ্রামের ২৪ বর্ষীয় রহমান সজিথা নামের এক মেয়ের প্রেমে পরে যায়।





দুজনে একই গ্রামের বাসিন্দা হলেও কেউই তাদের সম্পর্ক নিয়ে জানতেন না। তারা জানত একই গ্রামের ভালোবাসার সম্পর্ক কোনোদিনও মেনে নেবেনা তাদের পরিবার। তাই তারা প্ল্যান করে। প্ল্যান অনুযায়ী সজিথা একদিন তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে রহমানের বাড়িতে লুকিয়ে প্রবেশ করে। তারপর সেই বাড়িতেই ১০ বছর সে লুকিয়ে থাকে।





এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন হতে পারে ১০ বছরে কেউ কেন জানতে পারল না? আসলে রহমান নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে থাকে যার কারণে কেউই সজিথার উপস্থিতি টের পায় না। আসলে রহমান পেশায় একজন ইলেক্ট্রিশিয়ান। সে নিজের ঘরের বাইরে ইলেক্ট্রিক তার ঝুলিয়ে রাখত যে কারণে বাড়ির লোকেরা দরজা স্পর্শ করতে গেলেই কারেন্ট লাগত।





আর বাড়িতে সে মানসিক রুগি হওয়ার নাটক করত যার ফলে বাড়ির কেউই ঘরেরে বাইরে ইলেক্ট্রিক তার ঝোলানোর কারণ জিজ্ঞেস করতেন না। ফেব্রুয়ারি ২০১০-এ নিজেদের প্ল্যান অনুযায়ী সজিথা নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। সজিথা বাড়ির পাশের এক আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার জন্য বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরে না।





পুলিশে জানান হলে অনেকদিন খোঁজ করার পরও তার কোনো খবর না পাওয়া যাওয়ায় সজিথার বাড়ির লোকেরা তাকে মৃত বলে ধরে নেয়। প্রায় ১০ বছর রহমানের বাড়িতে থাকার পর সজিথা আর রহমান আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেয় আর সেই অনুযায়ী হঠাৎ একদিন রহমান বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। ৩ মাস ধরে তাকে খোঁজার পর তার বাড়ির লোকেরা হাল ছেড়ে দেয়।





এরপর একদিন রহমানের ভাই বশির কাজে শহরে যায়। সেখানে সে রহমান কে দেখে। রহমানকে ডাকলেও সে সাড়া দেয় না। অন্যদিকে রহমান বশিরকে দেখার সাথে সাথেই সেখান থেকে তাড়াতাড়ি চলে যায়। বশিরের এই ঘটনায় মনে সন্দেহ জাগে তাই সে পুলিশের সাহায্য নেয় রহমানকে খুঁজতে।





বেশ কয়েকদিনের চেষ্টায় পুলিশ রহমানকে খুঁজে পায়। কোর্টে রহমান আর সজিথাকে হাজির করা হলে তাদের ঘটনা শুনে জজ পর্যন্ত অবাক হয়ে যায়। তাদের এই ভাবে লু-কি-য়ে থাকার কারণ জানা হলে তারা জানায় তাদের মনে হয়েছিল যদি তাদের পরিবার তাদের সম্পর্কে জানে তবে কোনোদিনই মেনে নিত না।।




