




এই লকডাউনে নিজের বাড়িকে সবুজময় তৈরি করার মতো ভালো নিবেশ আর কি হতে পারে? নাগপুর এর বাসিন্দা মনিষা কুলকর্ণী আর অঙ্কিতা মসুরকর এর ভাবনা এমনই। “গ্রিন গিফ্ট” নামের নার্সারি চালান এই দুই মহিলা। কিন্তু লকডাউনে বেকার বসে থাকতে ভালো না লাগায় তাঁরা তাঁদের বাড়ির বারান্দা, ছাদ এসব জায়গায় ফুল,ফল,সবজির গাছ লাগিয়ে জৈবিক পদ্ধতিতে পরিচর্যা করেন।





মনিষা আর অঙ্কিতা দুজনেরই গাছপালার প্রতি অগাধ ভালোবাসা। মনিষার বাবার নার্সারি থাকায় ছোটো থেকেই মনিষা গাছপালার সাথেই থেকে এসেছেন। এইচআর প্রফেশন থেকে তিনি ধীরে ধীরে ফুলটাইম গার্ডেনার এবং উদ্যমী হয়ে যান। কর্পোরেট জগতে কর্মরত মনিষা বন্ধুবান্ধব-আত্মীয়স্বজনদের বিশেষ অকেশন -এ গাছপালা গিফ্ট করতেন।





তাঁর পরিচিতদের সেসব গাছপালা এত ভালো লাগত যে তাঁরা নিজে থেকেই গাছপালা গিফ্ট করার কথা বলতেন। তাই তিনি এটিকেই বিজনেস বানিয়ে নেওয়ার কথা ভাবেন। এইভাবে তিনি নিজের গার্ডেনিং এর শখকে ব্যবসায় পরিণত করলেন। ২০১৮ সালে তিনি তাঁর বান্ধবী অঙ্কিতার সাথে “গ্রিন গিফ্ট” লঞ্চ করেন। তাঁদের দোকানে বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ বান্ধব উপহার সামগ্রী পাওয়া যায়।





যেমন- ফেরী গার্ডেন, মিনিয়েচার গার্ডেন, টেরারিয়াম, বনসাই ইত্যাদি। ভারতের মধ্যে মহারাষ্ট্র এমন এক রাজ্য যার ওপর কো-ভি-ড এর বেশি প্রভাব পড়েছে। যে কারণে প্রায় সব জিনিসেই প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। লকডাউনে এক সপ্তাহ কাটানোর পর অঙ্কিতা আর মনিষা ভাবেন তাঁরা তাঁদের বাড়িকেই সবুজ করে তুলবেন। বাজার থেকে সেসময় বীজ কিনে আনা সম্ভব ছিল না।





তাই তাঁরা রান্নাঘর থেকেই বীজ জোগাড় করা শুরু করেন। তাঁরা টমেটো, ক্যাপসিকাম, বেগুন, লঙ্কা প্রভৃতির বীজ জোগাড় করেন আর শুকিয়ে রোপণ করেন। যখন তাঁদের বীজ থেকে অঙ্কুর বেড় হওয়া শুরু হলো তাঁদের খুশির সীমা ছিল না। তাঁরা নিজেদের সন্তানদের ফলের বীজ ফেলে দেওয়ার বদলে রোপণ করতে বললেন।





লকডাউনের সময় সাফাইকর্মীর না আসা মনিষার জন্য বরদান ছিল। তিনি নিজের বাগানে গাছের পাতাকে একত্রিত করে আবর্জনার সাথে মিশিয়ে সার তৈরি করলেন। মনিষা কিভাবে বাড়িতেই কীটনাশক বানান আসুন জেনে নিই- বড়ো চামচের দুই চামচ লিকুইড সাবান, এক বড়ো চামচ বেকিং সোডা, ১ লিটার জল।





অঙ্কিতাও একই পদ্ধতিতে নিজের বাড়িতে গার্ডেনিং করেন এবং নিত্যনতুন পদ্ধতি শেখার প্রচেষ্টায় থাকেন। সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে এই দুজন গত মে মাস থেকে আবার নিজেদের নার্সারির ব্যবসা শুরু করেছেন। যদি কেউ নিজেদের ফাঁকা সময়ের ব্যবহারে নিজের বাড়িতে গাছপালা লাগাতে চান তবে এইভাবে আপনারাও করতে পারেন।।




