




বাবা-মা এর জন্য যা কিছু বলা হয় বা যা কিছুই করা হয়, তা সবই কম। কারণ এদের ছাড়া জীবন অসম্ভব। একজন বাবা সবসময় কঠোর পরিশ্রম করে, যাতে তার বাচ্চাদের কোনোকিছুতে খামতি না থাকে। একজন বাবা যখন তার সন্তানকে আঙুল ধরে হাঁটতে শেখায়, তখন তিনিও একটি স্বপ্ন দেখেন যে, তার সন্তানও একদিন জীবনে বড় কিছু একটা করবে। আজকে আমরা আপনাদেরকে এমনই এক বাবা-ছেলের স্বপ্নপূরণের কথা বলব।





উত্তরপ্রদেশের রায়বেরেলি জেলার বাসিন্দা সূর্যকান্ত দ্বিবেদী ছিলেন লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিরাপত্তারক্ষী। তার ছেলের নাম হলো কুলদীপ দ্বিবেদী। সূর্যকান্ত সবাইকে বলতেন যে, তার ছেলেও একদিন সরকারি অফিসার হবে এবং তিনি তার পুত্রকে সরকারি অফিসার করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। আর তার ফলস্বরূপ কুলদীপ তার বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন। কুলদীপ এর বাবা সূর্যকান্ত দ্বিবেদী লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন।





সূর্যকান্ত 1991 সালে এই কাজে যোগদান করেছিলেন। এই সময় তার মাসিক আয় ছিল 1100 টাকা। তাদের পরিবারে মোট 6 জন সদস্য ছিলেন। সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই পরিবর্তন হয়। কুলদীপের বাবার বেতন বাড়লেও, তার পক্ষে পুরো পরিবারকে চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছিল। তাই তিনি নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করার পাশাপাশি কৃষিকাজও শুরু করেছিলেন। সূর্যকান্ত খুব একটা শিক্ষিত ছিলেন না, তাই তিনি লেখাপড়ার অভাবে কোনো ভালো চাকরিও করতে পারেননি।





লেখাপড়ার অভাবে তাকে যে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল, তার কারণে সে শিক্ষার গুরুত্ব খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছিল। তাই তিনি তাঁর ছেলেমেয়েদেরকে শিক্ষিত করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। তার সন্তানেরা পড়াশোনা শেষ করে বেসরকারি সংস্থানে কাজ করা শুরু করেছিল, এর ফলে তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটেছিল। সূর্যকান্ত দ্বিবেদীর ছোট ছেলে কুলদীপ যখন সরকারি অফিসার হয়েছিলেন,





তখন সে সবচেয়ে বেশি সুখ ও গর্ব অনুভব করেছিলেন। কুলদীপ তার প্রাথমিক শিক্ষা গ্রামের সরকারি স্কুল থেকেই শেষ করেছিলেন। এরপরে কুলদীপ 2009 সালে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিন্দি ভাষায় বিএ ডিগ্রী অর্জন করেন। তারপরে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোলে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পড়াশোনা শেষ করে তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য দিল্লিতে চলে যান। কুলদীপ তার পরীক্ষার জন্য বন্ধুর কাছ থেকে বই চেয়ে পড়াশোনা করতেন।





কুলদীপ তার প্রথমবারের ইউপিএসসি পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়। এরপরে কুলদীপ আবার প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন কিন্তু সেবারও তিনি ব্যর্থ হন। অবশেষে তিনি 2015 সালে তৃতীয়বারের প্রচেষ্টায় 242 তম স্থান অর্জন করে ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তিনি IAS অফিসার হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। সিভিল সার্ভিসে নির্বাচিত হয়ে কুলদীপ তার এবং তার বাবার দুজনেরই স্বপ্নপূরণ করেছিলেন এবং তিনি সবার অনুপ্রেরণাও হয়ে উঠেছিলেন।।




