




আগে এমন একটা সময় ছিল, যখন লোকেরা গ্রাম থেকে শহরের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিত। তখন মনে হয়েছিল যে, এই গ্রামগুলি খালি হয়ে গেলে, কৃষিকাজটা করবে কে? সময়ের সাথে সাথে মানুষের চিন্তাভাবনারও বদল ঘটেছে। যদি কেউ ভালো চাকরি পায়, তবে সে কৃষিকাজ করার বিষয়ে কেনইবা চিন্তা করবে? তবে অন্যদিকে এমন কিছু লোকও রয়েছেন, যারা তাদের জেদ এবং আবেগের সাথে আলাদা কিছু করার জন্য নতুন পথে যাত্রা শুরু করেন।





গত কয়েক বছরে, আপনি অবশ্যই এরকম অনেক সংবাদ পড়েছেন বা শুনেছেন, যেগুলিতে লোকেরা ভালো ভালো চাকরি ছেড়ে কৃষিকাজ শুরু করেছেন এবং কৃষিকাজ করে তারা এখন ভালো আয়ও করছেন। আজ আমরা আপনাদেরকে এরকমই একজন ব্যক্তির কথা বলব। তিনি হলেন পানীপথ জেলার বাসিন্দা ডঃ জয়পাল তানওয়ার। তিনি তার অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরের চাকরি ছেড়ে, জমিতে সবজি চাষ শুরু করেছিলেন।





তবে পরিবারের সদস্যরা তার এই সিদ্ধান্তে একটুও সন্তুষ্ট ছিলেন না। তার স্ত্রী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরাও তার বিরোধিতা করেছিলেন। তার বাবাও তাকে চাকরি না ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু জয়পাল তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। তিনি কৃষিকাজের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন এবং তার ফলস্বরূপ, আজ তিনি প্রতি একর জমিতে 6 থেকে 8 লাখ টাকা উপার্জন করছেন। এখন পরিবারের সকল সদস্যই তার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন।





জয়পাল যখন বলেছিলেন যে, তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে চাষের কাজ করবেন তখন তার স্ত্রী তার বিরোধিতা করে বলেছিলেন যে, তিনি একজন কৃষককে নয় একজন অধ্যাপককে বিয়ে করেছেন। এই পরিস্থিতিতে তিনি তার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে এক বছরের সময় চেয়ে নিয়েছিলেন। এবং তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, যদি কৃষিতে তার লোকসান হয় তবে সে কৃষিকাজ ছেড়ে দিয়ে পুনরায় তার আগের কাজে ফিরে আসবেন।





তিনি এক একর জমিতে কোনোরকম রাসায়নিক, কীটনাশক ছাড়াই ক্যাপসিকাম এবং শসার চাষ করেছিলেন এবং তার ফলনও বেশ ভালো হয়েছিল, যার ফলে তিনি সেই বছর 6 লক্ষ টাকা লাভ করেছিলেন। জয়পাল জানিয়েছেন যে, তিনি যেই সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক ছিলেন সেই কলেজের কাছে একটি কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র ছিল। সেখানে তিনি প্রায়ই যেতেন এবং এখান থেকেই তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, সবজি চাষ করলে ভালো লাভ হয়।





তারপরেই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, চাকরি ছেড়ে দিয়ে সবজি চাষ করবেন। 2019 সালে ‘সেন্ট্রাল অফ এক্সেলেন্স’ -এ ক্যাপসিকাম এবং বাঁধাকপি ফসল উৎপাদনের জন্য জয়পালকে কৃষিমন্ত্রী জেপী দালাল রাজ্যের সেরা উদ্ভিজ্জ বিক্রেতার পুরস্কার দিয়েছিলেন। সম্প্রতিই, তিনি প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে শিবাজী স্টেডিয়ামে জেলার সেরা কৃষক হিসেবেও পুরস্কার পেয়েছিলেন।





এখন তিনি প্রতি একর জমিতে 6 থেকে 8 লাখ টাকা করে আয় করেন। এবং এর সাথে তিনি 30 জনকে কর্মসংস্থানও দিয়েছেন। এখন পরিবারের সবাই তার অনেক প্রশংসা করেন। তিনি এখন লোকেদের কৃষিকাজ সম্পর্কে পরামর্শও দেন। এই কৃষিকাজ সম্পর্কিত পরামর্শ দেওয়ার জন্য তিনি একটি চার্জ নেন, তবে আশেপাশের কৃষকদেরকে বিনামূল্যে পরামর্শ দেন।।




