




আপনি কি জানেন, বর্জ্য আবর্জনা থেকেও ব্যবসা করে লাভ করা যায়। যদি না জেনে থাকেন তাহলে, রবি প্রসাদের গল্প শোনার পরে আপনিও অবাক হয়ে যাবেন। যিনি কলা গাছের বর্জ্য থেকে ব্যবসা শুরু করেছিলেন এবং সেই ব্যবসা থেকেই তিনি আজ লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছেন। তিনি তার এই ব্যবসার মাধ্যমে শত শত লোককে কর্মসংস্থানও প্রদান করেছেন। তিনি উত্তরপ্রদেশের কুশিনগর জেলার হরিহরপুর নামের একটি ছোট্ট গ্রামে তাঁর পরিবারের সাথে থাকেন।





মূলত এই গ্রামে কলা চাষ করা হয়। সেখানে প্রায় 27 হাজার হেক্টর জমিতে কলা গাছ রয়েছে। এই কলা পাকা হওয়ার পরে সেগুলোকে বাজারে বিক্রি করা হয় এবং গাছগুলোকে কেটে ফেলা হয়, যাতে আবার নতুন করে ফসল ফলানো যায়। তিনি এই কেটে ফেলা কলাগাছ গুলি নিয়েই ব্যবসা শুরু করেছিলেন। তিনি এই কলা গাছের কান্ড থেকে তন্তু বের করে, তা দিয়ে গালিচা, চপ্পল, টুপি, ডোর-ম্যাট এর মতো গৃহসজ্জা প্রস্তুত করতেন।





তিনি বর্জ্য কলাগাছের কান্ড থেকে তন্তু সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে, তা থেকে বিভিন্ন ধরনের গৃহসজ্জা প্রস্তুত করার কাজ একাই করতেন। তিনি গোরখপুরের দ্বিগবিজয় নাথ পিজি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে বিএ পাস করেছিলেন। এরপরে তিনি চাকরির খোঁজে দিল্লিতে যান। দিল্লিতে থাকাকালীন তিনি তার বন্ধুদের সাথে প্রগতি ময়দানে একটি প্রদর্শনী দেখতে গিয়েছিলেন।





সেখানে তামিলনাড়ুর এক ব্যবসায়ী কলাগাছের তন্তু থেকে তৈরি ব্যাগের স্টল রেখেছিলেন। সেই ব্যাগ গুলি রবির খুব পছন্দ হয়েছিল। আর এখান থেকেই তিনি কলা থেকে নতুন ব্যবসা শুরু করার এই দুর্দান্ত ধারণাটি পেয়েছিলেন। তিনি এই ব্যবসায়ীর কাছ থেকেই কলার তন্তু দিয়ে বিভিন্ন ধরনের জিনিস বানানো শিখেছিলেন। এরপর সেই ব্যবসায়ী রবিকে কোয়েম্বাটুরে যাওয়ার কথা বলেন,





কারণ সেখানে কলার তন্তুর মাধ্যমে কিভাবে বিভিন্ন পণ্য প্রস্তুত করা হয় তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল। এরপর রবি কোয়েম্বাটুরে গিয়ে প্রায় একমাস প্রশিক্ষণ নিয়ে সরাসরি তার গ্রামে পৌঁছোন এবং সিদ্ধান্ত নেন যে, তিনি এই ব্যবসাই শুরু করবেন। তাই তিনি কুশিনগর জেলার শিল্প কেন্দ্রে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী রোজগার যোজনা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন। 2018 সালে প্রধানমন্ত্রীর কর্মসংস্থান সার্জন প্রোগ্রামের আওতায় তিনি তার হস্তশিল্প সকলের সামনে তুলে ধরেন।





এই ব্যবসা করে শুধু তিনি নিজেই সাবলম্বী হননি বরং 450 মহিলাকে কর্মসংস্থানও দিয়েছিলেন। রাজ্য সরকারের আয়োজিত প্রদর্শনীতেও রবি তার স্টল রাখার সুযোগ পেয়েছিল। তিনি প্রায় 50 টিরও বেশি প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই প্রদর্শনীর কারণেই কুশিনগর জেলার নাম কলার তন্তুর তৈরি পণ্যের জন্য সারাদেশে খ্যাতি পেয়েছে। তার কর্মসংস্থানে মহিলাদের পাশাপাশি যুবকেরাও অংশগ্রহণ করেছে। রবি প্রসাদের এই গল্পটি সত্যিই আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়, যাতে আমরা আমাদের ব্যবসা শুরু করার বিষয়ে ভাবতে পারি।।




