




সর্বপ্রকার রত্নের মধ্যে হীরাকে সর্বাধিক মূল্যবান বলে মনে করা হয়। এর মূল্য লক্ষ থেকে শুরু করে কোটি পর্যন্ত হতে পারে। যদি কোনও দরিদ্র ব্যক্তি এই রত্ন পায়, তাহলে সে রাতারাতি কোটিপতি হতে পারে। অন্ধপ্রদেশের কুর্ণুল জেলার চিন্না জোনাগিরি এলাকার এক কৃষকের সাথে এমনই ঘটনা ঘটেছিল। কৃষকের দাবি হচ্ছে, তিনি জমিতে ৩০ ক্যারেটের একটি হীরা পেয়েছিলেন।





আর সেই হীরেটিকে তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ী কাছে ১.২ কোটি টাকায় বিক্রি করেছিলেন। এই ঘটনাটি সোশ্যাল-মিডিয়ায় বেশ ভাইরালও হচ্ছে। এ বিষয়ে এলাকার এসপি জানান যে, ‘আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করছি’। তিনি আরও বলেছিলেন যে, এই অঞ্চলে এ ধরনের ঘটনা এবার প্রথম ঘটছে এমনটা নয়। অতীতে এই অঞ্চলে এরকম অনেকগুলি ঘটনা ঘটেছে, যেখানে লোকেরা হীরা বা অন্যান্য মূল্যবান পাথর খুঁজে পেয়েছে।





আর এরকম সংবাদের প্রভাবে, প্রতিবছরই জুন থেকে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে লোকেরা হীরার অনুসন্ধান করতে এই এলাকায় আসতো। এইসব লোকেরা তাদের কাজকর্ম ও ব্যবসা-বাণিজ্য ছেড়ে এই এলাকায় এসে দিনরাত কেবল হীরা এবং অন্যান্য মূল্যবান পাথর খুঁজতে থাকতো। এদের মধ্যে আবার কয়েকজন আশেপাশের গ্রাম থেকে এসে তাঁবু খাটিয়েও থাকতেন।





পুলিশ আধিকারিকদের মতে বৃষ্টির দিনেই এখানে মূল্যবান পাথর পাওয়ার খবর পাওয়া যায়। প্রকৃতপক্ষে, বৃষ্টির জলে যখন মাটি ধুয়ে যায় তখনই এই ধরনের মূল্যবান পাথর পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। জোন্নাগিরি, তুগলি, মদিকেরা, পেরভালি, মহানন্দি ও মহাদেবপুর হল এমন কয়েকটি গ্রাম যেখানে মানুষ বৃষ্টির পরে হীরার সন্ধানের জন্য জড়ো হয়। কুর্ণুল জেলায় প্রায় প্রতিবছরই হীরা পাওয়ার খবর পাওয়া যায়।





২০১২ সালেই একজন কৃষক ৬০ লাখ টাকার হীরা পেয়েছিলেন। আবার ২০২০ সালেই একই সাথে দুই গ্রামের লোক ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার দুটি মূল্যবান পাথর পেয়েছিল। তারা এগুলি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে ১.৫ লাখ এবং ৫০,০০০ টাকার বিক্রি করেছিলেন। হীরা পাওয়ার খবর শুনে আশপাশের অনেক জেলা থেকেই লোকেরা এখানে এসে হীরার সন্ধান শুরু করেছেন।





শুধু স্থানীয় লোকজনই নয়, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোও এখানে হীরা অনুসন্ধানের অভিযান শুরু করেছে। এখানে হীরা পাওয়ার সম্পর্কে তিনটি বিখ্যাত গল্প রয়েছে। প্রথম গল্প অনুসারে, সম্রাট অশোকের সময়কাল থেকেই এখানকার মাটিতে হীরা সমাহিত করা হয়। কুর্ণুলের কাছে জোনাগিরি, মৌর্যদের দক্ষিণের রাজধানী সুবর্ণগিরি হিসেবে পরিচিত ছিল।





দ্বিতীয় গল্পটিতে বলা হয়েছে যে, বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সম্রাট শ্রী কৃষ্ণদেবরায় ও তার মন্ত্রী তিমারুসু এর দ্বারা হীরা এবং সোনার অলংকার গুলিকে সমাহিত করা হয়েছিল। আর তৃতীয় কাহিনীতে বলা হয়েছে যে, গোলকোণ্ডায় সুলতানির সময় থেকেই হীরা মাটিতে লুকিয়ে ছিল। এই এলাকা কুতুব শাহী রাজবংশ নামেও পরিচিত। এই রাজবংশ হীরার জন্য বিখ্যাত ছিল। একে গোলকোণ্ডা হীরাও বলা হত।।




