




বলা হয় যে, ব্যর্থতার চেয়ে বড় কোনো শিক্ষক নেই। ব্যর্থতার থেকে যে শিক্ষা আমরা পাই, তা আর কোন কিছুতেই পাই না। প্রত্যেকটি সফল ব্যক্তির পিছনেই অনেক ব্যর্থতার গল্প রয়েছে। পৃথিবীতে এমন কোনও ব্যক্তি নেই যিনি সর্বদাই জিতেছেন এবং কখনো ব্যর্থ হয়নি। প্রতিটি ব্যক্তি যে কাজে পরাজিত হয়, সেই কাজের পরাজয় এবং ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে পরেরবার আরো ভালো করে প্রস্তুতি নিয়ে সেটা করার চেষ্টা করে।





ব্যর্থতার পরে, যদি আমরা আত্মবিশ্বাসের সাথে আমাদের ভুল ত্রুটি গুলি চিহ্নিত করে সংশোধন করতে পারি, তাহলে এই ব্যর্থতাই একদিন সাফল্যের কারণ হয়ে উঠবে। আজ আমরা আপনাদেরকে এমনই একটি মেয়ের অনুপ্রেরণামূলক গল্প বলতে যাচ্ছি, তিনি শৈশব থেকেই বুদ্ধিমান ছিলেন। কিন্তু ইউপিএসসি পরীক্ষায় বেশ কয়েকবার ব্যর্থ হওয়ার কারণে তিনি খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তবে তিনি তাঁর মনোবল শক্ত করে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন এবং প্রচুর চেষ্টা করার পর অবশেষে তিনি সাফল্যও পেয়েছিলেন।





আমরা যে মেয়েটির কথা বলছি সে হল রাজস্থানের জয়পুরের বাসিন্দা আশিমা মিত্তাল, যিনি শৈশব থেকেই প্রতিটি ক্ষেত্রেই সাফল্য অর্জন করেছেন। তিনি পড়াশোনাতেও খুব ভালো ছিলেন। আশিমা পড়াশোনায় এতটাই মেধাবী ছিল যে, তিনি প্রথম স্কুল থেকে আইআইটি পর্যন্ত যাত্রায় মাত্র একবার প্রচেষ্টাতেই সফল হয়েছিলেন। তিনি পরে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডিগ্রিও অর্জন করেন। ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করার পর আশিমা একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কিছু সময় চাকরিও করেন।





কিন্তু এই কাজে তিনি তার আত্মসন্তুষ্টি করতে পারছিলেন না, তাই চাকরি ছেড়ে দিয়ে সিভিল সার্ভিসে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। এখনো অব্দি আশিমা কোন পরীক্ষায় ফেল করেনি, তাই তিনি এবং তার পুরো পরিবার আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে এবারও তিনি সফল হবেন। তবে এটি ঘটেনি, হয়তো পরীক্ষার প্রস্তুতির সময় কোনও ঘাটতি রয়ে গেছে যার কারণে তিনি সফল হননি।
এই ঘটনা তার জীবন কে শিখিয়েছিল যে, জীবন সবসময় একরকম হয় না,





প্রত্যেককেই জীবনে জয় এবং পরাজয়ের সম্মুখীন হতে হয়। তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষায় প্রথম বার ব্যর্থ হয়ে খুবই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তারপরে তিনি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করার সময় রাজস্থানের একটি গ্রামে যাওয়ার সুযোগ পান। সেখানে গিয়ে একটি বাড়ি পরিদর্শন করতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন যে, সেই বাড়ির লোকেরা তাদের তিন বছরের অসুস্থ কন্যাকে শুধুমাত্র টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি। এই কথা শুনে আশিমা খুব দুঃখ পেয়েছিল এবং তখনই সে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেছিল যে,





এই ধরনের মানুষদের জন্য তাকে কিছু করতেই হবে। যার জন্য তাকে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এরপর তিনি আবার পরীক্ষা দেবার সিদ্ধান্ত নিলেন এবং পরীক্ষা দেওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করাও শুরু করে দিলেন। আশিমা দ্বিতীয়বারের প্রচেষ্টায় 2016 সালে আইআরএস পদের জন্য নির্বাচিত হয়। কিন্তু তিনি এই সার্ভিসে যোগ দিতে চাননি। তবুও তিনি যোগ দিয়েছিলেন এবং পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন। আশিমা তার তৃতীয়বারের প্রচেষ্টায় অবশেষে 2017 সালে এআইআর রাঙ্কের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন এবং তিনি তার পছন্দসই পরিষেবা আইএএস পদের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল।





অসীমা তার ব্যর্থতা থেকে অনেক কিছু শিখেছে। সে তার অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার জন্য বলেছেন যে, ইউপিএসসি পরীক্ষা সফল হওয়ার জন্য আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে ও তার সাথে ধৈর্য ধরতে হবে। আশিমার এই সাফল্যের গল্প আমাদের সবাইকে শেখায় যে, জীবনে কখনো হাল ছেড়ে দিতে নেই। জয়, পরাজয় কোনটিই গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো যে আমরা এর থেকে কি শিখছি? জীবনে কোনো সমস্যা এলে, সেটিকে আমাদের দক্ষতার সাথে সমাধান করার চেষ্টা করা উচিত। আশা রাখুন হয়তো কিছুটা সময় লাগছে, তবে সাফল্য আপনি অবশ্যই পাবেন।।




