




লোকেরা প্রায়শই দেশপ্রেমের কথা বলে এবং দেশের সেবার উদাহরণ দেয়, তবে তাদের দেশপ্রেমের বাস্তবতা তখনই জানা যায় যখন তারা একটি ভালো বেতনের চাকরির প্রস্তাব পেয়ে বিদেশেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় এবং তাদের দেশ সেবার দাবিগুলি নিস্তেজ হয়ে যায়। তবে বিপরীতে, এমন কিছু লোকেরাও থাকেন যাদের কাছে অর্থ ও কর্মজীবনের চেয়ে দেশের সেবা সবচেয়ে বেশি মূল্যবান হয় এবং সুযোগ পেলেই তারা নিজেকে প্রমাণ করে দেখান।





এমনই একজন মহিলা হলেন নীহারিকা ভট্ট, যিনি বিদেশে মর্যাদাপূর্ণ চাকরি ছেড়ে আইপিএস সার্ভিসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এবং আই পি এস অফিসার হওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রমও করেছিলেন। আসলে এই নীহারিকা ভট্ট হলেন লখনউ এর বাসিন্দা ডাক্তার এমএল ভট্টের মেয়ে। তিনি জয়পুরিয়া স্কুলে পড়াশোনা করেছেন এবং তারপরে ইলেকট্রনিক্স এ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী নিয়ে বিদেশে ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজ শুরু করেছিলেন।





নীহারিকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালীন ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে কাজ করতেন। চাকরির সময়ই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, সে চাকরি ছেড়ে দিয়ে আইপিএস অফিসার হবেন। তারপরে একদিন নীহারিকা তার মা-বাবা কে তার ইচ্ছাটি জানান যে, তিনি ভারতে ফিরে এসে ইউপিএসসি পরীক্ষা দিয়ে দেশের সেবা করতে চান।





এরপর নীহারিকা বাবা-মার কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে ভারতে ফিরে আসেন। ভারতে আসার পরই তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দেন। তার বাড়িতে আসার পরে, নীহারিকা সারাদিন ঘরে বসে পড়াশোনা করত। কারণ, যে করেই হোক তাকে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতেই হবে। যার জন্য তিনি প্রতিদিন 10 ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অধ্যায়ন করতেন।





আর তার ফলস্বরূপ নীহারিকা ইউপিএসসি পরীক্ষায় 146 তম রাঙ্ক পেয়ে আইপিএস অফিসার হন। এই পরীক্ষার জন্য তিনি কোনও কোচিং ক্লাসে যোগ দেননি বরং এর পরিবর্তে সেল্ফ স্টাডি করে নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন। তিনি যখন দিল্লিতে অধ্যায়নরত ছিলেন, তখনও তার সমস্ত মনোনিবেশ কেবল পড়াশোনাতেই রেখেছিলেন এবং এর ফলে, সে মাত্র 1 বছর প্রস্তুতি নেওয়ার পরেই এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যায়।





এরপরে আইপিএস নীহারিকা ভট্ট আইএএস অর্জুন শর্মার সঙ্গে বিয়ে করেন। বিবাহের পর তিনি তার স্বামীর ক্যাডারে যোগদানের সুবিধা পেয়েছিলেন। নীহারিকার এই কঠোর পরিশ্রম ও দৃঢ় ইচ্ছা তাকে সেই জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলো যেখানে সে পৌছানোর স্বপ্ন দেখেছিল। পুরো পরিবার তারএই সাফল্যের জন্য গর্ববোধ করেছিল, কারণ তিনি যা বলেছিলেন তা তিনি করে দেখিয়ে দিয়েছিলেন।।




