




একই পরিবারের পাঁচটি কন্যা, দুটি কন্যা আইএএস, একটি কন্যা আইআরএস এবং বাকি দুটি কন্যা গ্রাফিক ইঞ্জিনিয়ার। এই পরিবারটি উত্তরপ্রদেশের বারেলি জেলার ফরিদপুর তহশীলএর নবদিয়া অশোক গ্রামের বাসিন্দা। তাদের পিতা মাতার নাম চন্দ্র সেন সাগর এবং মিনা দেবী। তাদের প্রথম কন্যা জন্ম নেয় 1981 সালে যার নাম তারা রাখেন অরিথি সাগর।





পুত্রের অভাব পূরণ করার জন্য তারা আবার বাচ্চা নেন কিন্তু পরপর চারবার তারা ব্যর্থ হন। পাঁচটি কন্যার পরে অবশেষে তাদের একটি পুত্রসন্তান জন্মায়। চন্দ্র সেন ও তার স্ত্রী মিলা দেবী তার কোনো ছেলে মেয়েরই পড়াশোনায় ঘাটতি রাখেনি। গ্রামের সবাই তাদের কৌতুক করে বলতো পড়াশোনা করে আইএএস হয়ে যাবে এমন কন্যাদের এত শিক্ষা দরকার কি? তবে তারা এগুলি এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বার করে দিতেন।





তবে এই কৌতুক গুলি চন্দ্র সেন সাগরের পাস করার জন্য একটি বরদান হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে এবং বাস্তবে তার তিনটি কন্যা ইউপিএস এর মতন কঠিন পরীক্ষায় সফল হয়েছে এবং দুটি মেয়ে ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে। অর্থাৎ তার পাঁচটি কন্যাই নিজে নিজে জীবনের সাফল্যের শীর্ষে রয়েছেন। তার পরিবারের জামাইরা ও দু’জনে আইএএস, দুজন আইআরএস এবং একজন আইপিএস অফিসার রয়েছেন।





চন্দ্র সেন ঠাকুরের পরিবারের প্রথম পরিবার যার তিন মেয়ে ইউ পি এস সি পরীক্ষায় সাফল্য পেয়েছে। চন্দ্র সেন বলেছিলেন ‘আমি সেই সুখী পিতা যার 5 কন্যা ই সফল।’তিনি আরো বলেন যে তাদের পরিবার একসময় রাজনৈতিক ক্ষেত্র হিসেবে জড়িত ছিল। কিন্তু আজ তারা আইএএস কন্যার বাবা মা হিসেবে পরিচিত। চন্দ্র সেন সাগরের বড় মেয়ে অরিথি সাগর দ্বিতীয় প্রয়াসেই 2009 সালের ইউপিএসসি পরীক্ষায় পাশ করে যান।





তার 428 নম্বরের ছিলেন এবং কম মার্কস এর কারণে তিনি আইএস না হয় আইআরএস এ পরিণত হন এবং বর্তমানে মুম্বাইতে জয়েন্ট কমিশনের কাস্টমের পোস্টে রয়েছেন। অন্ধপ্রদেশের বিজয় ওয়াদার সুরেশের সাথে তার বিয়ে হয়। সুরেশ আইয়ারএস অফিসার। চন্দ্র সেন এর দ্বিতীয় মেয়ে অর্পিতা সাগর তার বড় বোনের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে পরীক্ষা প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন এবং 2015 সালে আইএএস অফিসার হয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণ করে।





গুজরাট ক্যাডার আইএএস অর্পিতাকে বালসাদে বিডিও পদে নিয়োগ করেছে। তার বিয়ে হয়েছে ছত্রিশগড়ের বিপুল তিওয়ারির সাথে। চন্দ্র সেন সাগরের তৃতীয় মেয়ে অঙ্কিকা এবং ছোট মেয়ে অঙ্কিতা দুজনেই গ্রাফিক ইঞ্জিনিয়ার। বর্তমানে দুজনেই মুম্বাই ও নয়ডায় প্রাইভেট কম্পানীতে চাকরী করছেন। চন্দ্র সেন সাগরের চতুর্থ কন্যা আংশিকার এখনো বিয়ে হয়নি তবে তার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে এবং তার ছেলে একজন চিত্রপরিচালক।





তার পুত্র মালাং ছবিতে সহকারি পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছেন। একটি সাক্ষাৎকারে তাদের মা আমিনা দেবী বলেছিলেন যদি লোকের মুখ বন্ধ করতে চাও তবে তার সর্বোত্তম উপায় হলো শিক্ষা। এর জন্য আপনাকে খুব কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং তাদেরকে সফল হয়ে দেখিয়ে দিতে হবে যারা আপনাকে নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে। আজ পুরো পরিবার তাদের মেয়েদের জন্য গর্বিত।।




